রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২৯ এএম
গত ফেব্রুয়ারি
মাসে মারা যায় ফাতেমা আক্তার । তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখন যায় নি । দালালদের তথ্য অনুযায়ী
ফাতেমা আক্তার আত্মহত্যা করেন । তবে তার ভাই আক্কাস কথাটি অস্বিকার করে ।
মৃতদেহ দেশে আনার জন্য
সরকারের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ
বোর্ডে আবেদন করেছেন তার ভাই আক্কাস মিয়া । এর পূর্বে বোনের লাশ পেতে দালাল,
রিক্রুটিং এজেন্সির সহ বহু জায়গায় দৌড়াইতাছি করে কোনো
লাভ হয়নি।
আজ মঙ্গলবার করা আবেদনে জানিয়েছেন,
বিমানবন্দরে লাশ এলে সেটি
গ্রহণের জন্য আক্কাস মিয়ার
মুঠোফোন নম্বর দিয়ে রেখেছেন।
আক্কাস
মিয়া বললেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসেই আমার বোনের দেশে
আসনের কথা ছিল। দালাল
কয়, বোন নাকি আত্মহত্যা
করছে। যে মানুষটা দেশে
আসনের খুশিতে ছিল, সে ক্যান
আত্মহত্যা করব?’
২০১৯
সালে সৌদি আরবে যাওয়ার
আগে পাসপোর্ট সাইজের ছবিটি তুলেছিলেন
বোন। ৩৩ বছর বয়সী
বোনের নাম ফাতেমা আক্তার।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি সৌদি
আরবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। আর এ খবরটা
ভাই আক্কাস মিয়া ও শরিফুল
ইসলাম জানতে পেরেছেন প্রায় ১১ দিন পর।
চার ভাই–বোনের মধ্যে ফাতেমাই সবচেয়ে বেশি সুস্থ ছিলেন
বলে জানালেন দুই ভাই আক্কাস মিয়া
ও শরিফুল ইসলাম । বললেন, ঠান্ডা মেজাজের বোনটি আত্মহত্যা করেছে—এটা তাঁরা মানতে
পারছেন না।
শরিফুল
ইসলাম জানান, ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ
সময় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে
ফোনে ফাতেমার সঙ্গে কথা হয়। তখন
ফাতেমা জানিয়েছিলেন, মালিকের কাছে দেশে যাওয়ার
টিকিট চেয়েছেন বলে তিনি খুব
রাগারাগি করছেন। মালিকের বউ তাঁকে মারতে
আসছেন জানিয়ে পরে আবার কথা
বলবেন বলে ফোনের লাইন
কেটে দিয়েছিলেন।
শরিফুল
ইসলাম বলেন, ‘কী হইছে বোন,
কান্দো ক্যান—ফোনেই জানতে চাইছিলাম। বোন তাড়াতাড়ি ফোনের
লাইন কেটে দেয়। তারপর
কতবার রিং হইছে, বোন
আর ফোন ধরে নাই।’
স্থানীয়
দালালের কাছে বোনের খবর
জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যেতে
থাকেন। বোন জীবিত না
মৃত—এ খবর জানতে
চেয়ে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর মডেল থানায় দালালের
নামে সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন দুই ভাই। এরপর
গ্রামের মেম্বারসহ মুরব্বিদের নিয়ে দালালের বাড়িতে
গেলে চাপের মুখে দালাল বলেন,
ফাতেমা মারা গেছেন। সৌদি
মালিক টিকিট হাতে নিয়ে ফাতেমাকে
ডাকতে গিয়ে দেখেন দরজা
বন্ধ। পরে বন্ধ দরজা
খুলে ঘরে ঢুকে দেখেন
ফাতেমা আত্মহত্যা করেছেন।
দুই
ভাই জানালেন, মাস ছয়েক আগেও
ভিডিও কলে বোন তাঁর
ভাঙা আঙুল দেখিয়ে জানিয়েছিলেন,
মালিকের বউ মেরেছেন। খেতে
চাইলে খাবার না দেওয়াসহ অন্যান্য
নির্যাতনের কথাও জানিয়েছিলেন ফাতেমা।
তাই ফাতেমা আত্মহত্যা করেছেন—এটা তাঁরা মানতে
নারাজ।
দালালের
কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন
কাগজপত্রেও ফাতেমা মারা গেছেন বলে
উল্লেখ আছে। সৌদি আরব
থেকে আরবিতে পাঠানো প্রাথমিক ফরেনসিক মেডিকেল রিপোর্টটি নিউ আল-মদিনা
ট্রান্সলেশন সেন্টার থেকে অনুবাদ করিয়েছেন
দুই ভাই। এতে উল্লেখ
করা হয়েছে, ফাতেমার ঘাড়ের ওপরের দিক রক্তাক্ত ছিল,
সেখানে রক্ত গড়িয়ে যাওয়ার
প্রমাণ ছিল। এ ছাড়া
তাঁর গায়ে আর কোনো
আঘাতের চিহ্ন ছিল না। অনুবাদ
করা প্রতিবেদন বলছে, ফাতেমাকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নেওয়া
হয়েছিল।
অপশন
ম্যানপাওয়ার সার্ভিস নামের রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ফাতেমা গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি
আরবে গিয়েছিলেন। তাঁর দুই ভাই
জানালেন, রাজধানীতে এই এজেন্সির অফিস,
তাঁরা আজ পর্যন্ত মালিকের
চেহারাও দেখেননি। অভ্যর্থনা কক্ষে কথা বলতে হয়,
ফাতেমার লাশ দেশে আনার
বিষয়ে পরে সব জানাবে
বললেও ওই অফিস থেকে
আর কিছু জানানো হয়নি।
আর দালাল হিসেবে যিনি কাজ করেছেন,
তিনি ফাতেমাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয়।
এর আগে ফাতেমা নির্যাতনের
শিকার হচ্ছেন, সে কথা জানিয়ে
তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে
বললে বা এখন তাঁর
লাশ দেশে আনার কথা
বললে ওই দালাল খারাপ
ব্যবহার করেন। তাঁর ভাষ্যমতে, এটা
কি মামার বাড়ির আবদার যে চাইলেও লাশ
দেশে এনে দিতে পারবেন
তিনি।
ফাতেমার
ভাই শরিফুল ইসলাম দরজির কাজ করেন। লেবাননে
ছিলেন ছয় বছর। আরবি
ভাষায় কথা বলতে পারেন।
তিনি জানালেন, ফাতেমার মালিকের সঙ্গে আগে কথা বলে
তাঁকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে
দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন, তখন তিনি খারাপ
ব্যবহার করেছিলেন।
ফাতেমার
আরেক ভাই আক্কাস মিয়া
ছোটবেলা থেকেই এক চোখে দেখতে
না পান না। তিনি
কাঁচামালের ব্যবসা করেন। এখন দুই ভাই
তাঁদের কাজ ফেলে একবার
সরকারের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো,
আরেকবার ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ
বোর্ড, স্থানীয় ব্র্যাকের অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন বোনের লাশ দেশে ফেরত
আনার জন্য। দুই ভাই বললেন,
বৃদ্ধ মা–বাবা বাড়িতে
কান্নাকাটি করছেন। বোনের লাশটা দেখাতে পারলেও তাঁরা একটু শান্তি পেতেন।
স্থানীয়
ব্র্যাক অফিসের মাধ্যমে ফাতেমার দুই ভাই আজ
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে বোনের মরদেহ দেশে আনার আবেদন
জানিয়েছেন। জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের শ্রমকল্যাণ উইংয়ের কাউন্সেলর (শ্রম) মো. আমিনুল ইসলাম
গত ৩ মার্চ ফাতেমার
মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানো অথবা স্থানীয়ভাবে দাফনের
জন্য উত্তরাধিকারীদের মতামত জানতে চেয়ে ওয়েজ আর্নার্স
কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি দিয়েছিলেন।
তাতে থানা ও হাসপাতাল
সূত্রের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ফাতেমা
৩ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন। এই
চিঠিতেই মৃতদেহ শনাক্তকারী ব্যক্তির নাম ও যোগাযোগের
নম্বরসহ ওয়ারিশদের মতামত যৌক্তিক সময়ে পাওয়া না
গেলে করোনায় সৃষ্ট সংকটে সৌদি কর্তৃপক্ষ নিজ
উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে লাশ দাফন করবে
বলেও জানিয়েছিল।
ফাতেমার
ভাই শরিফুল ইসলাম জানালেন, তাঁরা বোনের লাশ আনার জন্য
প্রথমে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে
আবেদন করেছিলেন। সেখান থেকে কোনো উত্তর
পাননি। পরে ওয়েজ আর্নার্স
কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করলেন। এর আগে এখান
থেকে তাঁদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি।
নাম
প্রকাশ না করার শর্তে
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন,
সৌদি আরব থেকে লাশ
আনতে সময় একটু বেশি
লাগে, সেখানকার ১৪টি বিভাগের অনুমতি
নেওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতা পোহাতে হয়। বৈধ শ্রমিকের
লাশ দেশে আনার পর
লাশ দাফনের জন্য ৩৫ হাজার
টাকা এবং পরিবারের আবেদনের
পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিন লাখ টাকা
দেওয়া হয়।
প্রায়
১০ বছর আগে ফাতেমার
বিয়ে হয়েছিল। তাঁর কোনো সন্তান
হয়নি। ফাতেমা সাভারে একটি পোশাক কারখানায়
কাজ করতেন। তাঁর স্বামী দরজির
কাজ করতেন।
স্বামী
তাঁর গ্রামের বাড়িতে ঋণ করে জমি
কিনেছিলেন। এ ঋণ শোধ
করার জন্য স্বামী নিজেই
ফাতেমাকে বিদেশে পাঠান। ফাতেমা বিদেশ থেকে কয়েক মাস
পরপর স্বামীর কাছে ৩০ হাজার,
২০ হাজারের মতো করে টাকা
পাঠাতেন। তবে ফাতেমা বিদেশ
যাওয়ার পর থেকে স্বামী
তাঁর ভাইদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ করতেন
না। এমনকি ফাতেমা মারা যাওয়ার পরও
তিনি যোগাযোগ করছেন না বলে অভিযোগ
করলেন দুই ভাই। সর্বশেষ
গত ৪ ফেব্রুয়ারি ফাতেমার
স্বামী ফাতেমার ভাইদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এরপর
থেকে মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ করে রেখেছেন।
আক্কাস
মিয়া বললেন, ফাতেমার স্বামী চান বা না
চান, তাঁরা চান ফাতেমার লাশ
দেশে আনা হোক। ফাতেমার
মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তও চান তাঁরা।
ভারতের বৃহত্তম ও সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশের মথুরা শহরের রেলস্টেশন থেকে গত সপ্তাহে চুরি হও... বিস্তারিত
আগামীকাল শনিবার (২৭ আগস্ট) টরন্টো শহরের ১৯০ রেলসাইড রোডের টরেন্টো প্যাভিলিয়ন হলে এ বাংলা রক ফেস্ট ... বিস্তারিত
উন্নত ও নিরাপদ জীবনযাপন, চাকরি বা পড়াশোনার জন্য বর্তমান বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ কানাডা। আর তাই ... বিস্তারিত
গেছে। বাংলাদেশের পর কানাডা যাচ্ছে ঢাকার সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড প্রযোজিত ‘হাও... বিস্তারিত
শনিবার (৬ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় ভোরে কানাডায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রীসহ নিহত হলেন অধুনা... বিস্তারিত
সবুজের সমারোহে সজ্জিত টরন্টোর এডামস পার্কের মনোরম পরিবেশে গত ২৪ শে জুলাই রবিবার অনুষ্ঠিত হল চট্ট... বিস্তারিত
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপসিল ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য আলাদা কার্য... বিস্তারিত
এক বছর আগে ঘোষিত দরের চেয়ে ১-২ টাকা বেশি দামে রেমিট্যান্সের ডলার কেনায় ছয়টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্... বিস্তারিত
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮ জন... বিস্তারিত
চোখের ইশারায় খুলে যাবে অ্যাপ, আঙুলে ছুঁয়ে সরাতে হবে স্ক্রিন। মাথা নাড়ালেই হবে অনেক কাজ। প্রযু... বিস্তারিত